"প্রবেশ কর জ্ঞান অন্বেষণে, ছড়িয়ে পড় দেশের কল্যাণে"
কেরু উচ্চ বিদ্যালয় একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি ১৯৪৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমান সরকার শিক্ষার
গুণগত মান বিকাশে বদ্ধপরিকর এবং একই সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির আধুনিকায়ন ও শিক্ষার্থী এবং
অভিভাবকগন নিতথ্য সরবরাং সহজ করার জন্য আধুনিক মানের ভবন নির্মাণ, উন্নত মানের তথ্য প্রযুক্তির ল্যাব স্থাপন ও বিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে ডায়নামিক ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। আমি আশা করছি এই ওয়েব সাইট চালু করার ফলে যে কেউ প্রতিষ্ঠানের যে কোন তথ্য সম্পর্কে খুব সহজে অবগত হতে পারবে এবং বর্তমান সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বাস্তবরূপ দান করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
আমার প্রত্যাশা কেরু উচ্চ বিদ্যালয় একটি ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এলাকার সন্তানদের সুশিক্ষিত করে গড়ে তুলে জাতি গঠনে অনন্য অবদান রাখবে। প্রতিষ্ঠানটি যেন সুন্দর ও সাবলীল ভাবে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে অত্র এলাকার উচ্চ শিক্ষার প্রাণ কেন্দ্রে পরিনত হতে পারে সেজন্য সবার উৎসাহ ও সহযোগিতা কামনা করি।
শিক্ষা অর্জন করা মানুষের মৌলিক অধিকার। এ অধিকারকে যথাযথভাবে বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিশ্বের অনেক দেশ আজ উন্নত দেশ হিসেবে উন্নতির চরম শিখরে আরোহণ করেছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে সাধ্যমত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যুগের সাথে সংগতিপূর্ণ বিকাশের জন্য আমরা প্রত্যেকেই ভাবি নিজ নিজ সন্তানদের নিয়ে। প্রকৃতির সন্তান মানব শিশুকে পরিশুদ্ধ হতে হয়, পরিপূর্ণ হতে হয় স্বীয় সাধনায়। এ ক্ষেত্রে শিক্ষায় হলো আমাদের মূলমন্ত্র। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি শিক্ষার মৌলিক উদ্দেশ্য হলো আচরণের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন। আর এ লক্ষ্যে তাদেরকে সৃজনশীল, স্বাধীন, সক্রিয় এবং দায়িত্বশীল সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা। এ জন্য প্রয়োজন যোগ্য শিক্ষকমন্ডলী এবং উপযুক্ত শিক্ষাদান পদ্ধতির সমন্বয়ে একটি শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ। আমি বিনয়ের সাথে দাবী করি, কেরু উচ্চ বিদ্যালয়ে এসব কিছুর সমন্বয় ঘটানো সম্ভব হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মজ্জাগত প্রতিভা সহজে বিকাশের জন্য প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি স্মার্ট ডিজিটাল প্রযুক্তি শিক্ষা, সাংস্কৃতিক, আনুষ্ঠানিক, খেলাধুলাসহ নানাবিধ শিক্ষা।
দক্ষিণবঙ্গের সর্ববৃহৎ ভারী শিল্প প্রতিষ্ঠান কেরু এ্যান্ড কোম্পানী (বাংলাদেশ) লিমিটেড এর আওতায় এবং বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত সর্বাধুনিক একাডেমিক ও প্রশাসনিক অবকাঠামো সম্বলিত একটি প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান 'কেরু উচ্চ বিদ্যালয়'। এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মেধা, মনন, সহনশীলতা, নেতৃত্ব, সৃজনশীলতা, শৃঙ্খলা ও দক্ষতার ভিত্তিতে মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ এবং দেশপ্রেমিক ও আধুনিক বিশ্বের চাহিদা সম্পন্ন সুযোগ্য নাগরিক হিসেব গড়ে তোলাই আমাদের অঙ্গীকার। ১৯৩৮ সালে অবিভক্ত বাংলার নদীয়া জেলার দর্শনা নামক প্রত্যন্ত অঞ্চলে গড়ে ওঠে দেশের বৃহত্তম চিনি শিল্প প্রতিষ্ঠান কেরু এ্যান্ড কোং (বাংলাদেশ) লিঃ তখন থেকেই কর্মের খাতিরে এখানে আসতে থাকেন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং নিয়োগ হতে থাকে কর্মচারী। তাদের সন্তানদের জন্য প্রয়োজন হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের। সেই প্রয়োজন থেকেই ১৯৪৭ সালের ২৯ এপ্রিল যাত্রা শুরু হয়েছিল "কেরুজ বয়েজ এ্যান্ড গালর্স" স্কুলের। কর্তৃপক্ষ প্রথমে শিশু শ্রেণী থেকে ৩য় শ্রেণী পর্যন্ত মাত্র ৩৮ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৫১ সালে চালু হয় ৫ম শ্রেণী। ১৯৫৬ সালে বিদ্যালয়টিকে জুনিয়র হাই স্কুলে উত্তির্ণ করা হয় এবং ১৯৬৮ সালে তা সরকারী স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৭১ সালে কেরু উচ্চ বিদ্যালয় নাম ধারণ করে প্রথম বারের মত এই বিদ্যালয় থেকে ছাত্ররা এস,এস,সি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে এবং সাফল্য অর্জন করে। তারপর থেকে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা ও ছাত্র সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং বিদ্যালয়ের ফালাফল উত্তরোত্তর ভাল হতে থাকে। যার ধারা বাহিকতায় ১৯৯৩ সালে জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়ের গৌরব অর্জন করে। আজো এটি জেলার সেরা বিদ্যালয়ের একটি হিসেবে পরিগণিত হয়ে আসছে। বিদ্যালয়ের পিইসি, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ঈর্ষণী ফলাফলের পাশাপাশি বৃত্তি পরীক্ষার ফলাফলও উগ্রজেলা ও জেলার মধ্যে সেরা। খেলাধুলা বাজন স্কাউটে বিদ্যালয়ের সুনাম দেশ ব্যাপি। বিদ্যালয়ের স্কাউট দল কয়েকবার ভারত গমন কওে বিশ্ব স্কাউট জাম্বুরীতে
অংশগ্রহণ করেছে। ২০১১ সালে বিদ্যালয়ের এক জন স্কাউট সুইডেনে বিশ্ব স্কাউট জাম্বুরীতে বাংলাদেশের ৫ সদস্যের প্রতিনিধিত্ব করে। ৮৩. ৪০০০ ভিত্তি বর্তমান সরকার শিক্ষার প্রতি যে সু-দৃষ্টি প্রদান করেছেন তার প্রতি সদয় হয়ে আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি যদি জাতীয়করণ করেন, তরে কতে আমরা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারকে সুযোগ্য, সুশিক্ষিত এবং দেশপ্রেমিক যুগোপযোগী, তথ্যপ্রযুক্তি নির্ভর নাগরিক উপহার দিতে পারবো ইনশাল্লাহ।